Episode 26 | Bhalobasar Morshum Originals Antara & Pritam
সকাল সাতটা থেকেই শুরু হয়েছে এলার্মের কনসার্ট। ৭:০৫, ৭:১৫, ৭:৩০… বারবার মোবাইলে থাপ্পর মেরে একটা এলার্ম বন্ধ করতেই আর একটা বাজতে প্রস্তুত। কিন্তু যাকে তোলার জন্য এত কর্মকাণ্ড, সে তো সকালের ঘুমে আচ্ছন্ন। বহু বছরের চেষ্টা করেও সাড়ে আটটার আগে কিছুতেই ঘুম ভাঙে না তার। প্রথমে অ্যালার্ম, তারপর মায়ের বকবক, শেষে বাবার গম্ভীর গলায় গর্জনের পর আরও আধঘন্টা এপাশ-ওপাশ করে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তার। হোস্টেলে আসার পর থেকেই সৌভিকের এই এক সমস্যা। রুমমেট থাকলে তবু ঘুম থেকে তুলে দেয়, অবশ্য তার জন্য তাকে দু-চারটে গালাগালি হজম করতে হয়। কেউ চার দিন হল বাড়ি গিয়েছে। সৌভিকও যেতে চেয়েছিল, কিন্তু বাবা পরিষ্কার বলে দিয়েছে সেমিস্টার এর আগে বাড়ির দিকে পাও বাড়াবে না। অদ্ভুত বাবা-মা, কোথায় ছেলে বাড়ি দেখতে চাইছে তাকে সাদরে ওপর তো না জানাবে, হম্বিতম্বি করে। ভালোই বাড়ি থেকে কলেজ যাতায়াত করছিল। একদিন বাড়ি ফিরতে দেরি হতেই বাবা-মা দুজনে একসাথে অশান্তি শুরু করলো। সেদিন মা-বাবাকে একটু ভয় দেখাতেই মেজাজ নিয়ে বলেছিল সৌভিক, বেশি অশান্তি করলেই সে হোস্টেল কিংবা মেসে গিয়ে থাকবে। কে জানবে? বাবা-মা এক কথায় রাজি হয়ে যাবে। মাত্র ১৫ দিনের মাথাতেই সবকিছু ব্যবস্থা করে ফেলল বাবা। কোনদিন বাড়ির বাইরে থাকার অভ্যাস ছিল না সৌভিকের, ভালো করেই জানে বাবা যা কিপটে, মোটেই বেশি হাত খরচা দেবেন না। নেশা টেশা করে নাও কিন্তু এখানে ওখানে পাসপোর্ট খেতে খুব ভালবাসে। বাড়িতে থাকলে যা পকেট মানি পেতো সেসব দিয়ে ভালোই চালিয়ে নিতে পারতো, কিন্তু এখানে কি করে ম্যানেজ করবে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিল না। অনেক ভেবেচিন্তে প্ল্যান করে মাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে যেভাবেই হোক মেস বাড়ির প্ল্যানটা বানচাল করবে ভেবেই নিয়েছিল সৌভিক। সেই মতোই মেশে আসার ৩-৪ দিন আগে মুখটা বেশ ভার করে মায়ের কাছে পৌঁছেছিল রান্না ঘরে, তারপর ধরা গলায় বলেছিল… “মা কাল একটু খাসির মাংস রান্না করে দেবে?”